লেখা টেখা -৫

বাংলা সাহিত্যের দুটি কবিতা সম্ভবত সব থেকে জনপ্রিয়, একটি লিখেছেন, জীবনানন্দ দাশ-

শোনা গেল লাশ কাটা ঘরে নিয়ে গেছে তারে;
কাল রাতে ফাণ্ডুন রাতের চাঁদ মরিবার হলো তার সাধ।

.. … … …

থুরথুরে অন্ধ পেঁচা অশ্বত্থের ডালে বসে এসে,
চোখ পাল্টায়ে কয়: ‘বুড়িচাঁদ গেছে বুঝি বেনোজলে ভেসে?’
চমৎকার!
ধরাযাক দু-একটাইঁদুর এবার-

আরেকটি হলো- সুধীন্দ্রনাথ দত্তের-

একটি কথার দ্বিধা থরথর চূড়ে
ভর করেছিলো সাতটি অমরাবতী

একটি নিমেষে দাঁড়ালো সরণী জুড়ে,
থামিল কালের চিরচঞ্চল গতি ;

অদ্ভুত দুটি কবিতা। কবির মনের ভাবনাটুকু হয়তো তেমন গভীর করে বুঝে উঠতে পারি না,কিন্তু তা যে অদ্ভুত,সে বেপারে কোন সন্ধেহ নেই,আবার বুঝতে পারার চেষ্টা করার আগ্রহের কিছুটা কমতি নেই। মানুষ হিসেবে জন্মানোর সুবিধেটুকু পেয়ে আমরা কতই কিছুই না করছি,অথচ এর সাথে যে জীবনটা আমাদের দেওয়া হলো তার মানেই বুঝে উঠতে পারা গেল না। এদিকে সেদিকে খুঁজে ফেরে শুধুই আধো আধো ব্যপার গুলো মাথায় ভেতরে গুমোট মেঘের মতো করে ঘুরতে থাকে।

হুট করে চাকরিটা ছেড়ে দিলেম। আমাদের বেঁচে থাকার আধেয় জোগাড় করতে আমাদের অনেক কিছুই করতেহয়, চাকরি একটা তার সহজ সমাধান,সবাই করে। কিন্তু সবাই যে তার চাওয়ার যায়গাটায় যেতে পারে তেমনটা হয় তার উদাহরণ খুব বেশি যে আছে সেটি আমি বলতে পারছিনে ,কিন্তু এ ব্যাপারে নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান বলতে আপত্তি নেই। আমরা যে সমাজে বাস করি,তাতে মোটামুটি বেশিরভাগ ছেলে-পেলের-ই স্বপ্ন থাকে পাস করে বের হয়েই একটি চাকরি জোগাড় করা। সেক্ষেত্রে পড়াশোনার ক্ষেত্রবিশেষ নিয়ে হয়তো চাকুরির বিষয়-বস্তু আলাদা হয়, কিন্তু কে বলতে পারে আগাম কোথায় হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিউট থেকে আমার পড়াশোনা। আমি জানি পাস করে আমারও চাকুরি করতে হবে। কিন্তু কোথায় করবো তা হয়তো দ্বিতীয় বর্ষে ঠিক করার উপায় নেই কিন্তু কেমন করে জানি আমি ঠিক করে রেখেছিলাম মনে মনে যে থেরাপ(Therap BD Ltd.) এ আমাকে যেতে হবে। তারপর পাস করার আগেই সবকিছু যখন হয়ে গেল, তখন সত্যিকার অর্থেই যে গভীর ভাল লাগা কাজ করছিল সেইটুকুই কিন্তু পুরো সময় ধরেই ছিল, এমনকি এখনো আছে। কোন বড় রকমের  সমস্যায় ছিল না। তারপরেও কেনই বা হুট করে ছেড়ে দিলেম।

ঐ যে লাশ কাটা ঘরে-

নারীর প্রণয়ে ব্যর্থ হয় নাই;
বিবাহিত জীবনের সাধ
কোথাও রাখেনি কোন খাদ,
সময়ের উদ্বর্তনে উঠে এসে বধূ
মধু-আর মননের মধু
দিয়েছে জানিতে;
হাড়হাভাতের গ্লানি বেদনার শীতে
এ-জীবন কোনদিন কেঁপে ওঠে নাই;
.. … … …

জানি- তবু জানি
নারীর হৃদয় – প্রেম- শিশু- গৃহ- নয়সব খানি;
অর্থ নয়, কীর্তি নয়, সচ্ছলতানয় –
আর এক বিপন্ন বিষ্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে
খেলা করে
আমাদের ক্লান্ত করে
ক্লান্ত- ক্লান্তকরে;

থেরাপ-এর সেইফটি নেট থেকে বের হয়ে আসা কম কঠিন একটি কাজ নয়। সেই কঠিন কাজটি হঠাৎ করে ফেলায় মনটা কেমন আচানক পৃথুলা হয়ে গেছে। এতগুলো মানুষ,কত কথা,কত হাসি তামাশা, আত্মার টান সব কিছু ফেলে রেখে নতুন কিছুর জন্যে ছুটে চলা…. এটাই জীবন।

জীবনটা সত্যিই অদ্ভুত। এর সহজ ব্যাখ্যা কেও জানে না, সবই আধো আধো।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান