লেখা টেখা -৫

বাংলা সাহিত্যের দুটি কবিতা সম্ভবত সব থেকে জনপ্রিয়, একটি লিখেছেন, জীবনানন্দ দাশ-

শোনা গেল লাশ কাটা ঘরে নিয়ে গেছে তারে;
কাল রাতে ফাণ্ডুন রাতের চাঁদ মরিবার হলো তার সাধ।

.. … … …

থুরথুরে অন্ধ পেঁচা অশ্বত্থের ডালে বসে এসে,
চোখ পাল্টায়ে কয়: ‘বুড়িচাঁদ গেছে বুঝি বেনোজলে ভেসে?’
চমৎকার!
ধরাযাক দু-একটাইঁদুর এবার-

আরেকটি হলো- সুধীন্দ্রনাথ দত্তের-

একটি কথার দ্বিধা থরথর চূড়ে
ভর করেছিলো সাতটি অমরাবতী

একটি নিমেষে দাঁড়ালো সরণী জুড়ে,
থামিল কালের চিরচঞ্চল গতি ;

অদ্ভুত দুটি কবিতা। কবির মনের ভাবনাটুকু হয়তো তেমন গভীর করে বুঝে উঠতে পারি না,কিন্তু তা যে অদ্ভুত,সে বেপারে কোন সন্ধেহ নেই,আবার বুঝতে পারার চেষ্টা করার আগ্রহের কিছুটা কমতি নেই। মানুষ হিসেবে জন্মানোর সুবিধেটুকু পেয়ে আমরা কতই কিছুই না করছি,অথচ এর সাথে যে জীবনটা আমাদের দেওয়া হলো তার মানেই বুঝে উঠতে পারা গেল না। এদিকে সেদিকে খুঁজে ফেরে শুধুই আধো আধো ব্যপার গুলো মাথায় ভেতরে গুমোট মেঘের মতো করে ঘুরতে থাকে।

হুট করে চাকরিটা ছেড়ে দিলেম। আমাদের বেঁচে থাকার আধেয় জোগাড় করতে আমাদের অনেক কিছুই করতেহয়, চাকরি একটা তার সহজ সমাধান,সবাই করে। কিন্তু সবাই যে তার চাওয়ার যায়গাটায় যেতে পারে তেমনটা হয় তার উদাহরণ খুব বেশি যে আছে সেটি আমি বলতে পারছিনে ,কিন্তু এ ব্যাপারে নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান বলতে আপত্তি নেই। আমরা যে সমাজে বাস করি,তাতে মোটামুটি বেশিরভাগ ছেলে-পেলের-ই স্বপ্ন থাকে পাস করে বের হয়েই একটি চাকরি জোগাড় করা। সেক্ষেত্রে পড়াশোনার ক্ষেত্রবিশেষ নিয়ে হয়তো চাকুরির বিষয়-বস্তু আলাদা হয়, কিন্তু কে বলতে পারে আগাম কোথায় হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিউট থেকে আমার পড়াশোনা। আমি জানি পাস করে আমারও চাকুরি করতে হবে। কিন্তু কোথায় করবো তা হয়তো দ্বিতীয় বর্ষে ঠিক করার উপায় নেই কিন্তু কেমন করে জানি আমি ঠিক করে রেখেছিলাম মনে মনে যে থেরাপ(Therap BD Ltd.) এ আমাকে যেতে হবে। তারপর পাস করার আগেই সবকিছু যখন হয়ে গেল, তখন সত্যিকার অর্থেই যে গভীর ভাল লাগা কাজ করছিল সেইটুকুই কিন্তু পুরো সময় ধরেই ছিল, এমনকি এখনো আছে। কোন বড় রকমের  সমস্যায় ছিল না। তারপরেও কেনই বা হুট করে ছেড়ে দিলেম।

ঐ যে লাশ কাটা ঘরে-

নারীর প্রণয়ে ব্যর্থ হয় নাই;
বিবাহিত জীবনের সাধ
কোথাও রাখেনি কোন খাদ,
সময়ের উদ্বর্তনে উঠে এসে বধূ
মধু-আর মননের মধু
দিয়েছে জানিতে;
হাড়হাভাতের গ্লানি বেদনার শীতে
এ-জীবন কোনদিন কেঁপে ওঠে নাই;
.. … … …

জানি- তবু জানি
নারীর হৃদয় – প্রেম- শিশু- গৃহ- নয়সব খানি;
অর্থ নয়, কীর্তি নয়, সচ্ছলতানয় –
আর এক বিপন্ন বিষ্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে
খেলা করে
আমাদের ক্লান্ত করে
ক্লান্ত- ক্লান্তকরে;

থেরাপ-এর সেইফটি নেট থেকে বের হয়ে আসা কম কঠিন একটি কাজ নয়। সেই কঠিন কাজটি হঠাৎ করে ফেলায় মনটা কেমন আচানক পৃথুলা হয়ে গেছে। এতগুলো মানুষ,কত কথা,কত হাসি তামাশা, আত্মার টান সব কিছু ফেলে রেখে নতুন কিছুর জন্যে ছুটে চলা…. এটাই জীবন।

জীবনটা সত্যিই অদ্ভুত। এর সহজ ব্যাখ্যা কেও জানে না, সবই আধো আধো।

লেখা টেখা -৪

অনেক দিন ধরেই আমি একটা কমন প্রশ্ন সবাইকে করে আসছি,কি অবস্থা,হাও ইজ লাইফ? কথা বলা শুরু করার জন্যে বা কোশল জিজ্ঞাসা করার জন্যে অনেকেই অনেক কিছু বলে,আমি “হাও ইজ লাইফ” দিয়ে শুরু করি,এতে অনেকেই তেতো বিরক্ত।

এর দু-একটা কমন উত্তরও আছে,লাইফ সাকস অথবা ভাল। কিন্তু আসলেই লাইফ কেমন চলছে? সতিকার অর্থে লাইফ কি একটা ডেডলক নয়কি? Eat, sleep, run, stop এর একটা লুপ। এর মাঝে নানা ঘটনাপ্রবাহ।

এরআরও আগে একটি গূঢ় পশ্ন করা যায়,লাইফ কি ?

এর অনেক উত্তর আছে,শেকসপিয়র এর মতো হয়তো অনেকই বলবে,জীবন একটা নাট্টমঞ্চ,কিংবা আইস্টাইনএর মতো করে বলা,জীবন হলো সাইকেল চালানোর মতো,আপনাকে চালিয়ে যেতে হবে। হয়তো কেনা গণিতবিদ বলবে,জীবন হচ্ছে একটি ডিফারেনসিয়াল ইকুয়েশান যা কিনা অনেক ভাবে সলভ করা যায়। কিংবা কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর ছাত্র হয়তো দেখবে লাইফ রানস অন প্রবাবিলিটি যার অনেকগুলো আউটকাম থাকতে পারে। কেও বলবে জীবন মানেই যাপন করা,কেও মনে করে জীবন মানেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা আবার কারো কারো মতে লাইফ হচ্ছেএসটিডি।

শ্রডিংগার-এর মতে,লাইফ কোন রহস্যময় কিছু বা ম্যাজিক্যল স্পার্ক নয়, যা সবকিছুকে এনিম্যাট করে,লাইফ হচ্ছে প্রসেস,যা কিনা পদার্থ এবং শক্তির মিথষ্ক্রিয়া যা ফিজিক্স এবং কেমিস্ট্রি এর ল-গুলো মেনে চলে। তাহলে এই গ্রহে কিছু মেঘের মতো ধূলিকণার মাঝে এতো এই কমপ্লেক্স সাবস্ট্যান্স গুলো তৈরি হলো?

আমরা জানি যে ডিএনএ হচ্ছে জীবনের নীলনকশা যা কিনা একটি অসাধারণ সত্যতা যার মাঝে অসংখ্য গল্প লেখা থাকে। আমরা যদি প্রাইমেটদের দিকে লক্ষ করি,তাহলে দেখবো আমাদের মোস্ট রিসেন্ট কমন এনসেসটর হচ্ছে শিম্পাঞ্জি যাদের সাথে আমাদের ডিএনএ সিকুয়েন্সের ৯৯% মিল,গরিলার সাথে ৯৮.৪%,ওরাংওটাং এর সাথে ৯৭.৪%। এভাবে সব গুলো প্রাণির সাথেই দেখা যাবে কিছু না কিছু মিল রয়ে গেছে এবং এগুলো কতো সুসংগঠিত এবং কত সুশৃঙ্খল। বিষ্ময়কর। কিন্তু মজার ব্যপার হচ্ছে আমদের এই জগৎ যদি থার্মোডিনামিক্স এর দিদ্বীয় সূত্র মতে চলে তাহলে তা চরম বিশৃঙ্খলার দিকে ধাবিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না।

কতশত প্রশ্ন আর প্রশ্ন। কি দরকার ছিল এতো কিছুর ?কেনইবা এতোসব আচার-অনুষ্ঠান, আরম্ভরতার ?  Life sucks! Totally!

লেখা টেখা -৩

ব্যস্ত থাকার অনেক সুবিধা তো আছেই,অসুবিধাও আছে- এর মধ্যে , মানুষ যে সামাজিক প্রাণি এই তথ্যটি মাথা থেকে নাই হয়ে যায়, মাঝে মাঝে।

সুহানা আপু’র সাথে ইউনিভার্সিটি থাকাকালীন অনেক ঘুরাফেরা হতো। মাঝেই মাঝেই আমরা বের হতাম এখানে সেখানে,প্রচুর আড্ডাও হতো-একবার গেলাম জাহাঙ্গিরনগর প্রজাপতি মেলা দেখতে।

এরপর যা হলো,আমি জয়েন করলাম থেরাপ-এ,আপু চলে গেলেন মৌলভিবাজার ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে। আর দেখা-সাক্ষাত হয় না। গত দু বছরে মনে হয় হয়নি। অনেকবার এটেম্প নেওয়ার পরও আমরা কেও সময় মেলাতে পারি না। কারো না কারো সমস্যা থাকেই। গত বৃহস্পতিবার দেখা হওয়ার একটা সম্ভাবনাছিল, কিন্তু আমি থেকে গেলাম অফিসে,পোস্ট-রিলিজ সংক্রান্ত কাজে।

তবে বৃহস্পতি বার অফিস থেকে ফেরার পথে ঢাকা কমিককনএ গেলাম। বনানীতে হওয়ার সুবাদে যাওয়া হলো আরকি। San Diego Comiccon এরসাথে তো তুলনা করে লাভ নেই,কিন্তু যখন দেখলাম যে কতগুলা টি-শার্টের স্টল ছাড়া আর কিছুই নেই,তখন মনে হচ্ছিল আসাটাই বৃথা। সালমান ভাই সাথে ছিলেন,উনি একটা হুডি কিনে ফেললেন চট করে। লাভের মধ্যে এইটাই বলা যায়। আমি কিছু ছবি তুলে চলে আসলাম।

সব কিছুর ক্ষেত্রেই যে ব্যস্ততা দায়ী তা নয়,কিছুটা আলস্য বা আমার ঘুম-বিলাসও দায়ী।

আজ বাংলাদেশে রিচার্ড স্টলম্যান, দি গ্রেট আরএমস,এসেছিলেন। ডেফোডিল ইউনিভার্সিটির অডিটরিয়ামে সেমিনার ছিল। স্বাক্ষর আর আমি মোটামুটি সিওর যে আমরা যাবো তাকে দেখতে।

ইটস রিচার্ড স্টলম্যান ফর রিয়েল বাই হিমসেলফ।

যাহলো,আমিও ঘুমিয়ে সময় পার করে দিছি সময়,স্বাক্ষরও তাই করছে। কিছুক্ষণ আগে মোজাম্মেল ভাইয়ার ফেইসবুক ওয়ালে রিচার্ডস্টল ম্যান-এর সাথে ফটো দেখে প্রচণ্ড আফছোস হচ্ছিল আর নিজের উপর প্রচণ্ড রাগ হচ্ছিল।

লেখা-টেখা-২

থাকা আর না থাকার মধ্যে পার্থক্য কোথায়? এই এতো মানুষ, প্রতিদিনই কত শত হাজার নতুন আসছে পৃথিবীতে , যাচ্ছেও সেরকম। এই যাওয়া আসার জন্যে কত-শত আয়োজন, কোলাহল, কত আরম্ভরতা।

এই মহা বিশ্বের সাথে আমাদের এই পৃথিবীকে তুলনা করলে তাকে ধূলি কণা বললেও ভুল হবে না। একটি ধূলি কণা নিয়ে পুরো জগতের মাথা ব্যথার কি বা কারণ থাকতে পারে ! কোন কিছু নিয়ে মন খারাপের কোন কারণ নেই। আমি আছি, থাকবো না এর মাঝের ব্যবধানটুকু অতি ক্ষুদ্র।

বায়ুমন্ডলের উপরিভাগে নানা রকম মহাজাগতিক রশ্মির ইন্টারসেকশনে তৈরি হয় মিওন যার লাইফ টাইম হচ্ছে ২ মাইক্রোসেকেন্ড। মুহূর্তেই হাজার হাজার কোটি তৈরি হয়, আলো কাছাকাছি বেগে পৃথিবীতে আঘাত হানে, তারপর নাই হয়ে যায়, তাতে কি আমার কিছু আসে যায়?  আমার মন খারাপ হলেও আলফা সেনচুরি-র কিছু আসে যায় না। তাহলে আমাদের এইসব জীবন যাপন অহেতুক?

সব কিছুই যেন ছোটন্ত ঘোড়া। ছুটে চলার আনন্দেই চলা। কেন এই ছুটে চলা, যার কোন মানে নেই। ছুটে চলার মাঝে কি আনন্দ আছে? আনন্দই বা কি? মস্তিস্কের অনুরণন?

এও হতে পারে এই সব যা দেখছি তার কোন কিছুই সত্যি নয়, শুধুই কারো ভাবনা ?

লেখা-টেখা -‌১

অনেকদিন থেকেই ভাবছি কিছু একটা লিখি, কিন্তু তা আর হয়ে উঠছে না। একটা সময় অনেক লিখতাম। আমার ডায়েরী লেখার অভ্যাস ও ছিল। গল্প লিখতাম, বিশেষ করে ছোটগল্প, কবিতাও লেখা হতো মাঝে সাঝে।

কলম নিয়ে বসলেই লেখা চলে আসতো আপনা-আপনি। এখন আর হয় না। পুরোনো ডায়েরী গুলো দেখে মাঝে মাঝে হাসি।

এখন লিখতে বসে ভাবছি কি লেখা যায়। মাথা থেকে কিছুই বের হয় না।

চিন্তা ভাবনা গুলো কেমন জানি এক জায়গায় আটকে গেছে। অর্ণবের একটা গান আছে-

 বাক্সে বাক্সে বন্দি বাক্স,

বাক্সে বাক্সে বন্দি বাসা,

বাক্স দিয়ে বাক্স গড়া,

বাক্স দিয়ে স্বপ্ন আশা।

এই গানটা শুনতেছিলাম। এই শুনে মনে হচ্ছিল, এই লিরিক্স যে লিখেছে সে নিশ্চয় অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামার ছিল। বাক্স মানে অবজেক্ট।

কয়েকদিন আগে মটনটা বেশ খারাপ হয়ে ছিল। নানা রকম চিন্তা ভাবনা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল।

জীবন-যাপন নিয়েও ভাবতে ছিলাম। মানুষ হয়ে জন্ম গ্রহণ করায় অনেক সুবিধা মধ্যে আছি, সেইটা জানি, কিন্তু অসুবিধাও অনেক। মুল সমস্যা মাথার মধ্যে। সারাক্ষণ নানা রকম চিন্তা করে। এই যে দুনিয়া, কত বড়। পৃথিবীইটাই কতো বড়ো কিন্তু আসলে এইটা কোন বড়র মধ্যেই পরে না। সৌরজগৎ বলে যে জিনিস আমারা জানি, এইটা গ্যালাক্সি এর তুলানায় কিছুই না। এই রকম হাজার কোটি গ্যালাক্সি আছে যেগুলো আমরা দেখতে পারি, এর বাইরেই কতগুলা আছে তার কোন ঠিকানা নাই। এই মহাবিশ্ব যদি এতোই বড় হয়ে থাকে, তাইলে এর তুলানায় আমি কিছু্‌ই না। এই কিছুইনা টা ভাল লাগছে না।

একটা কিছুই-না-ময় জীবন নিয়ে আমাদের কত কাজ, কত রকম কিছু্। মন খারাপ করার মতোই।

তবুও

বেশ খানিকটা সময় চলে গেছে
দ্রবীভূত হয়ে গেছে সবকিছু, সবাই ভুলে যায়,
আমিও ভুলে যাই। ভুলে যাওয়াটাই ভদ্রতা।
তবুও মাঝে মাঝে রাতের পর রাত আমার  চোখ
বিশ্রাম হারিয়ে জেগে থাকে। ভাবনার পর ভাবনা
গুলো একটার পর একটা এসে তোমাকেই জীবন্ত
করে তুলে। আমি কথা কই তোমার সাথে।
তুমি খিল খিল করে হাসো, হেটে বেড়াও,
আমি তাকিয়ে দেখি তোমাকে,আমিও হাসি।
তোমার নুপুরে শব্দ শুনি ।
মাঝে মাঝেই ইচ্ছে হয় তোমর হাত খানা ছুয়ে দিই
অমনি তুমি পালিয়ে যাও, মিলিয়ে যাও।
কেন যাও?

কথোপকথন

নিলু ফেইসবুক ওপেন করে বসে ছিল। কিছু করার নেই আজ। চুপচাপ বসে ফিডগুলো দেখছিল। তখনি মিলি তাকে নক করলো।

মিলি- ‘হ্যালো’

নিলু- ‘হাই, কি করিস?’

মিলি- ‘কিছু না, হাত ব্যথা করছে! খুব’

নিলু- ‘কেন রে, হাতে কি হলে তোর আবার?’

মিলি- ‘কি হলে তা বুঝতেছি না,  শুধু ব্যথা!!’

নিলু- ‘খুব বেশি নাকি?’

মিলি- ‘না-আ.. তা না খুব বেশি না।’

নিলু- ‘ঠিক হয়ে যাবে, চিন্তা করিস না, আমাদের শরীরের ব্যথা সহজেই ঠিক হয়ে যায়, এইটা একটা বাচুয়া।’

মিলি- ‘সব ব্যথায় ঠিক হয়ে যায় …’

নিলু- ‘হয়তো। কিন্তু …’

মিলি- ‘কিন্তু কি? মনের ব্যথাও ঠিক হয়ে যায়’

নিলু- ‘তাই! আমি জানি হয় না, আমরা ভুলে থাকি।’

মিলি- ‘হয় হয়, ইচ্ছে করতে হয়, ইচ্ছে করলেই হয়।’

নিলু- ‘সেই ইচ্ছে করানোর উপায় কি আমাকে বলবি?’

মিলি- ‘মানে?’

নিলু- ‘দেখ, তোর হাত ব্যথা করছে ওষুধ খেলে সেরে যাবে, মনের অসুখ কিসে সারে? ক্যাটালিস্ট গুলো কি হতে পারে?’

মিলি- ‘নিজে নিজে ব্যাপারটা ভাবলেই হয়, তুই যে কারণে ব্যথা পাচ্ছিস, সেটাকেনেগেটিভ-লি ভেবে দেখ। আর যা হয়েছে তাকে পজিটিভ-লি বেশি বেশি করে দেখ, ভালদিকগুলোকে হাইলাইট কর। ’

নিলু- ‘তুই পারছিস? খালি জ্ঞান দিস।’

মিলি- ‘আল্টিমেট প্রিন্সিপাল বলে একটা কথা আছে, সেটি দিয়ে একটা ব্যপার তৈরি করলেযদি ব্যপারটা নাইও হয়েও যায়, তার রেমনেন্ট তো থাকবেই।’

নিলু- ‘দেখলি নিজের যুক্তিতে নিজেই হেরে গেলি, আমি ওই তোর রেমনেন্ট এর কথাই বলছি, ওটা মনের মধ্যে সমসময় লেগেই থাকে।’

মিলি- ‘থাকে তবে, সেটাকেও মুছে ফেলা যায়।’

নিলু- ‘সত্যি যায় কি?’

মিলি- ‘যাবে না কেন? অবশ্যই যাবে।’

নিলু- ‘আমি পারি না। ’

মিলি- ‘পারি না কোন শেষ কথা না, আমার ধারণা তুই ঠিক মতো চেষ্টাই করিস না।এখনো ডুবে থাকিস ওর মাঝে। জীবনটা তো এতো ছোট না, একটা ঘটান ঘটতেই পারে।পেছনে কি ছিল সেটা নিয়ে এতো ভাবলে সামনে দেখবি কি করে?’

নিলু- ‘দোস্ত, আমি চেষ্টা করি, কিন্তু দেখ পারি না, মনের মধ্যে খালি খচ খচ করে। কিন্তু আমি সত্যিই ভুলে যেতে চাইরে।’

মিলি- ‘এই জন্যে আরও বেশি বেশি করে চেষ্টা করতে হবে, ফেইসবুকে কাওকে পছন্দ হয়নাই, অন্য কারো সাথে টাইম দে, দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে সব।’

নিলু- ‘(হাসির ইমো) আমার তোরে পছন্দ। অনেক… চল আমরা পালিয়ে যাই। ’

মিলি- ‘দিবো থাপ্পড়, আমি তোর থেকে বয়সে তিন মাসের বড়ো, মনে থাকে না সে কথা , আমাকে আপু ডাকবি।’

নিলু- ‘ওরে আমার আপুরে..। আচ্ছা আপু বলেন, আপনি এতো জ্ঞান দিলেন, আপনি ভুলতে পারছেন?’

মিলি- ‘পারি নাই তাই কি হইছে, এখন তো সেসব নিয়ে ভাবি না। আমি আর এসবের মধ্যে নাই।’

নিলু- ‘মিথ্যে কথা, আমি জানি তুই এখনো ভাবিস।’

মিলি- ‘একদম যে ভাবি না তা না,  মাঝে মাঝে ওর কথা খুব মনে পরে। আমাদের খুব ভালকিছু সময় ছিলরে, সেগুলো কথা মনে পরে। তখন খুব কান্না পায়। মাঝে মাঝেকাঁদিও। কিন্তু জানি এসব অর্থহীন। ’

নিলু- ‘আমরা সবই বুঝি, কিন্তু কিছুই করতে পারি না, বলা একদম সহজ, করা অনেক কঠিন, বুঝলি?’

মিলি- ‘তা কঠিন, কিন্তু কথায় আছে না, কঠিনেরে আমরা করবো জয়, একবার জয় হয়ে গেলেই তো হালকা হয়ে যায়’

নিলু- ‘হুম, কিন্তু কি করবো বল, মনটা যে কি চায়, নিজেই জানে না, কোথা থাকে তার হদিস পাই না।’

মিলি- ‘আমার কি মনে হয় জানিস, সব কিছুই নরমাল, সব কিছু ঠিক আছে, যা হইছে তাহওয়ার ছিল, আর যা হয়নাই, তা হওয়ার ছিল না, এই সত্যটা মেনে নিলে ঝামেলা থাকেনা।’

নিলু- ‘হা হা হা, ঠিক বলছিস। আমি সবসময় সব কিছুকেই পজিটিভ-লি নেই, অপটিমিস্টিক ভাবে চলতে চেষ্টা করি।’

মিলি- ‘তুই কিন্তু খারাপ আছিস, পরীক্ষার আগের দিনও আমার সাথে কথা বলছিস অনেক্ষণ। সিরিয়াস হ, এইটা তোর অপটিমিস্টিক চলন?’

নিলু- ‘আরে… পরীক্ষা, পরীক্ষা থেকে কি তুই কম গুরুত্বপূর্ণ।’

মিলি- ‘সময় খুব খারাপ জিনিস, কেমন ছন্দময় একটা সময় ছিল, আর এখন সব কিছু মাঝেমাঝে গুবলেট হয়ে গেল। একসময় আমি ওর জন্য কতটা পাগল ছিলাম, তুই চিন্তা কর, ওযা চাইতো তাই করতাম। আর কি না আমাকে এভাবে রেখে চলে গেলো। না ওর কথা আরমনে করতে চাই না। ভাবলেই রাগ ধরে। ’

নিলু- ‘হা হা.. ’

মিলি- ‘জানিস নতুন একজন ছেলে আমাকে ইদানীং জ্বালায়। খুব পাগলামি করে’

নিলু- ‘তোরে সবাই জ্বালাবে এইটাই তো ঠিক, আমি কি কম জ্বালাই নাকি, কি বলেছিস ওকে?’

মিলি- ‘ওকে একদিন ডিরেক্টলি বললাম, দেখো, আমি যেহেতু হৃদয়ের খেলা একবার খেলেছি, এবং এই খেলায় আমি ঠকেছি, আমি আর এই খেলায় যেতে চাই না। এখন যা হবেনিতান্তই সেটেলমেন্ট। আমি ওই কাওয়ার্ডটাকে যতটা ভালবেসেছি, নতুন করে অতটাকাও বাসতে পারবো না। সত্যি কথা কি জানিস, আমি ওকে যতটা ভালবাসতাম, তারপরদ্বিতীয় যাকে ভালবেসেছি, সে হলো তুই।’

নিলু- ‘ কি বলিস, আজ নিশ্চয় সূর্য উঠেই নি। আমি নিশ্চয় স্বর্গে বাস করছি।’

মিলি-‘ন্যাকামি করবি না, তুই ভাল করেই জানিস, বুঝেও না বুঝার ভান করিস, রাগ লাগে।’

নিলু-‘তাই নাকি, রাগলে তোকে ভালই লাগে কিন্তু।’

মিলি-‘লাগবেই তো, আমি তো আর অসুন্দর না।’

নিলু-‘হুম তুমি এতো সুন্দর, দেখলেই মরে যেতে ইচ্ছে করে।’

মিলি-‘দেখ ফাজলামি হচ্ছে। ’

নিলু-‘হচ্ছেই তো। আচ্ছা বাদ দিলাম, এখন বল, তারপর কি বললি ঔই ছেলেটা কে?’

মিলি-‘তোর কথা বললাম, যে আমি তোকে ভালবাসি, এখন যদি কাও ভালবাসি সেটা হবে তোর মতো।’

নিলু-‘আমর মতো মানে?’

মিলি-‘মানেতোকে যতটুকু ভালবাসি সেইরকম। শুধুই বন্ধুত্ব। তোকে আমি অনেক ভালবাসি, কিন্তু দেখ, তোকে আমার বয়-ফ্রেন্ড ভাবতে গেলে হাসি পায়। ’

নিলু-‘হুম..’

মিলি-‘তারপর, আমাকে জিজ্ঞাসা করে, আমার কেমন ছেলে পছন্দ?’

নিলু-‘তুই বললি?’

মিলি-‘হুমবললাম। বললাম যে, তাকে অবশ্যই আমার থেকে কম সুন্দর হতে হবে। ফর্সা ছেলেআমার পছন্দ না, ডার্ক হতে হবে। এবং আমার এইজ-এর হতে হবে বা একটু বেশি। আমিঅনেক ডমিনেটিং। বয়স বেশি হলে ডমিনেট করা যাবে না। ’

নিলু-‘তারপর-’

মিলি-‘তারহাইট হবে আমার থেকে একটু লম্বা, খুব বেশি লম্বা ছেলে আমার পছন্দ না। আরতাকে অবশ্যই আমাকে অনেক অনেক ভালবাসতে হবে, এবং আমার সব দৌড়াত্ন সহ্য করতেহবে।’

নিলু-‘কি বললো সে?’

মিলি-‘হা হা, সে সব কিছুতেই রাজি, সমস্যা হলো সে তো ডার্ক না, তাই বলে কিনা, প্লাস্টিক সার্জারী করে কালো হয়ে যাবে। হাহা ’

নিলু-‘হুম, ভালই হবে, রাজি হয়ে যায়।’

মিলি-‘তাই, রাজি হয়ে যাবো, ইয়েস বলে দেই কি বলিস?’

নিলু-‘হুমবলতে পারিস। কিন্তু আমার চিন্তা আসলে অন্য কিছু, ইংরেজি ডিকশনারিতে একটাশব্দ আছে, ইনফাচুয়েশান, জানিস নিশ্চয়। এইটা তা্‌ই হতে পারে। জানিসতো ওয়ালেযে পেরেক তাড়াতাড়ি ঢুকে সেটা বেরিয়েও আসে তাড়াতাড়ি।’

মিলি-‘হুম, কিন্তু ও ওরকম না, অনেক ভেবে চিন্তে কথা বলে। তবে অবশ্য আমাকে বলেছে, আমার কনফিউশন থাকলে বলতে।’

নিলু-‘তুই কি বলিস, তোর কনফিউশন আছে?’

মিলি-‘আসলেকি জানিস, আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। ওকে মনে হয় এখনো ভালবেসে উঠতেপারি না। ওর সাথে কথা বলতে ভাল লাগে, সময় কাটাতেও। তারপরেও কেমন জানি।ভালবাসা কিন্তু অন্য জিনিস। এইটা এতো সহজে হয় না। একের সাথে অনেক কালথেকেও অনেক সময় হয়ে উঠে না। কিন্তু হাজার মাইল দুরে থেকেও ভালবাসা যায়। ’

নিলু-‘হুম, তু বরং সেটেল ম্যরিজ করে ফেলিস। সেটেলমেন্ট-ই বেটার। রিলেশন ভেঙ্গে পরারসম্ভাবনা কম থাকে।  আর ভেঙ্গে পরলেই খুব বেশি পিছুটান থাকে না।’

মিলি-‘হুম। হয়তো কিন্তু আমি কি চাই নিজেই এখনো বুঝে উঠতে পারি না। আসলে মেয়েদের মন অনেক কমপ্লেক্স।’

নিলু-‘ হা হা, এইটা তুই বললি, আমি তো জানি, এইটা মেয়েদেরকে বললে রেগে যায়।’

মিলি-‘হুম .. কিন্তু সত্যি কিন্তু তাই, তুই দেখ, তুই আমার কত ভাল বন্ধু, আমরা একসাথেকত সময় কাটিয়েছি, কিন্তু তুই কি আমাকে বুঝতে পারিস?’

নিলু-‘বুঝি হয়তো, আধো আধো। ’

মিলি-‘বুঝিস না, আমি জানি তুই বুঝবি না।’

নিলু-‘আচ্ছা আমি কে বলতো?’

মিলি-‘তুই হচ্ছিস আমার আকাশে একটা নক্ষত্র। যা দূরে থাকলেই ভাল লাগে, তোর কাছে এলে পুরে যাই।’

নিলু-‘তাই, তালে তোর কাছে আমার যাও উচিৎ না কখনো।’

মিলি-‘আসিস না প্লিজ।’

নিলু-‘আসবো না। কিন্তু তুই ভাল থাকিস। প্লিজ। তুই খারাপ থাকলে আমার কষ্ট হয়।’

মিলি-‘কেন হয় রে?’

নিলু-‘থাক না, সব প্রশ্নের উত্তর জানতে নেই।’

মিলি-‘তুইসবসময় আমাকে বলিস, ভালবাসা কি জিনিস তুই জানিস না, অথচ তোকে ঘিরে এতোভালবাসা কেন রে? যব যায়গায় স্পর্শ রেখে যাস অথচ তুই নিজেই বলিস বুঝিস না।’

নিলু-‘হুম, বেশি বুঝা ভাল না রে, কম বুঝবি তাই ভাল’

মিলি-‘ওই থাক, আজ যাই রে। থাক। অন্যদিন কথা হবে।’

নিলু-‘হুম টাটা, ভাল থাকিস।’

মিলি- ‘তুই ও থাকিস। টাটা বাই।’

 

ভালবাসা

মনের মাঝে এ এক অদ্ভুত অনুরণন
হৃদয়ে বেজে যায় প্রতিটি অনুক্ষণ
ভালবাসা কি প্রহেলিকার মতো
মনে আছে, চোখে আছে, তবুও নেই কারণ, অকারণ যতো
ভাল লাগে, তাই ভালবেসে যাই,
জানার নেই কিছু কি করি কি পাই
তুমি বলো, আমি বলি, আমাদের ইচ্ছে যতো,
মিশে গিয়ে ভালাবাসা হয় কত শত।

আমার যত ইচ্ছে গুলো

ইচ্ছে করে কোন এক বসন্তের রাতে  বাতাশ পুত্র তাণ্ডবকে নিয়ে একটু খেলে আসি কালবৈশাখী ঝড়। রাত্রটি বসন্তেরই হতে হবে এমন কোন কথা নেই, শুধু চাই ঝড়ে উড়ে যাক সমস্ত চাল-চৌখাট। নতজানু হয়ে সমনে দাড়াক সমস্ত সুলাইমানি জিন। হুকুমেই থর থর করে কেঁপে উঠুক বিশ্বচরাচর।

ইচ্ছে করে কোন এক তৃষ্ণার্ত দুপুরে খা খা রোদে বাঘের মুখ থেকে ছিনিয়ে আনি খাবার । দুপুর তৃষ্ণার্ত হতেই হবে এমন কোন কথা নেই, হোক না কিছুটা দন্দ্ব-লড়াই বাঘের সাথে। আমাকে কুর্ণিশ জানাক বনের সকল সিংহ এসে।

ইচ্ছে করে দুস্তি করে রাবনের সাথে। রাবনের সাথে দুস্থি হতেই হবে এমন কোন কথাই নেই, বরং সীতাকে নিয়ে আমিই পালাই। যুদ্ধ করি সমস্ত লঙ্কা-সেনানীর সাথে, পাঞ্জালড়িবীরবাহুপুত্র ইন্দ্রজিৎ এর সাথে।

ইচ্ছে করে হারিয়ে যাই সমুদ্রের ফেনা ভেঙে হেঁটে হেঁটে নারিকেলবীথিদ্বীপ ছেড়ে কোন এক চম্পক দেশে। অথবা কোন এক ভর জোৎস্না রাতে চাঁদকে হাতে নিয়ে ছুড়ে ফেলি নীল আটলান্টিকে।

শুধু ইচ্ছে করে না রোদ-উচ্ছাসে ধানের শীষের হাওয়ার সাথে হেঁটে হেঁটে গান গেয়ে তোমার ভালবাসার নরম স্পর্শের শৈত্যে ভরে তুলতে আমার এ মন।

স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা

যারা জন্ম থেকেই স্বাধীন তাদের কাছে স্বাধীনতার গুরুত্ব খুব সহজ একটা ব্যাপার। সেটা খুব বেশি করে উপলব্ধি করার মতো অবস্থা মনে হয় স্বাধীনতা উত্তর অর্থাৎ আমাদের প্রজন্মের খুব বেশি হয় নি। কারণ পরিবেশ, সময়ের ব্যাপ্তিতে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারও হালকা হয়ে আসে যদি সেটা নিয়ে অনুশীলনের ঘাটতি থাকে। আমাদের অনুশীলনের যে ঘাটতি রয়ে গেছে সেটা বোধহয় কাউকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। সবাই বুঝতে পারে। আমরা যারা নিজেদের স্বাধীন এবং আধুনিক মানুষ মনে করি, তাদের অনুশীলন গুলো যে দায়িত্বপূর্ণ হবে সেটাই স্বাভাবিক হওয়ার কথা ছিল। দেশ ব্যাপারটি উপলব্ধির ব্যাপার। আমরা যেমন প্রতিদিন নিয়মিত গোসল করে নিজেদের পরিষ্কার রাখি, এই পরিষ্কার রাখার প্রক্রিয়াটা কিন্তু একটা কাজ, সেটা নিজের জন্যে করি, আলস্য কিংবা অন্য কোন অজুহাত এসে বাধা দেয় না। ঠিক তেমনি দেশকে নিজের অংশ মনে করে নিলে মনে হয় অজুহাত দেওয়ার অংশগুলো কমে যাবে। দেশ আমাদের পরিচর্যা (Serve) করবে না, বরং আমরা দেশকে পরিচর্যা করবো, এমনটাই হওয়ার কথা। কিন্তু তারপরেও আমরা প্রতিনিয়ত নানা রকম অজুহাত বা যুক্তি তৈরি করে গালা গালি করি, এই দেশ আমাদের কি দিয়েছে বা দেয়নি তার হিসেব-নিকেষে বসে যাই, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে থাকি। হিসেবটা বোধহয় উল্টাটা হওয়াই উচিৎ ছিল।

 

আধুনিক মানুষের দায়িত্বগুলো বুঝে নেওয়াটাও ব্যক্তিত্বের পরিচয় বহন করে থাকে। দেশকে পরিচর্যা করা খুব কঠিন কাজ নয়, নিজের জায়গা থেকে নিজের কাজটুকু সঠিক ভাবে করে যাওয়টাই দেশের পরিচর্যা। দেশ মূলত একটি সু-সংগঠিত সিস্টেম। সেই সিস্টেমের উপাদান গুলো একটি আরেকটির উপর নির্ভর করে।  একটি বিশৃঙ্খল হলেই তার প্রভাব অন্যগুলোর উপর পরে। এই জন্যে আমার মনে হয় প্রত্যেকটি মানুষের ফিলোসপিকাল দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত হওয়া খুব বেশি জরুরি। নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে একটা খুব ছোট ঘটনার ভাল মন্দ আলাদা করার পার্থক্য বুঝতে না পারলে সেটার প্রভাব বুঝতে পারাও কঠিন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়– একজন রিক্সাওয়ালা যেখানে ১০ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা ভাড়া নেয়, তারও প্রভাব অন্য যায়গায় পরে। একজন রিক্সাওয়ালর তার নিজের কাজের জন্যে গর্ব করার কথা ছিল কিন্তু অনেক সময় অন্যের দয়া কিংবা অনুগ্রহকে মিশিয়ে ফেলে কিংবা জোর করে অন্যকে বিপদে ফেলে। এটি একটা ছোট্ট সিস্টেম ইরর, যদিও আমরা সবসময় ইগনোর করে থাকি।

 

এই স্বাধীনতা দিবসে সবাইকে শুভেচ্ছা,  সেই সাথে সবার ব্যক্তিত্ববোধ জেগে উঠবে, সবাই দায়িত্বশীল আধুনিক মানুষ হয়ে উঠবে সেই কামনা ব্যক্ত করছি।

 

এর সাথে স্বাধীনতা দিবস নিয়ে অনেক ছোট বেলার লেখা একটা কবিতাও দিয়ে দিলাম।

 

তিক্ত ২৫ মুক্ত ২৬

 

আরক্ত পৃথিবী, আতিক্ত মানব

তমিস্র হিংস্রতায় অবগাহন;

আজ স্মরণে ব্যাথার স্মৃতি সব।

সুখ ও কৃষ্ণতায় উত্থিত মন, মনন।

 

ক্লান্ত দেহ, অবসন্ন মন, নিশুতি আকাশ

সুখনিদ্রা, ক্রমশ গভীর হতে রাত্রি

হঠাৎ শব্দ, মাতিল উগ্র গন্ধে বাতাস,

সেদিন; তীব্র ভয়, বাঁচিবার আর্তি।

 

কঠিন আচরে বাংলার ভূমি, অগ্নিদাহ্য নক্ত,

হা হা কার। করুণ আকুতি, চক্ষুষ্মান রক্তবন্যা।

সজ্জিত হানাদার মাতাল মন করছে সিক্ত

তারপর; চারদিকে ঘোষিত রব, আন বাংলার স্বাধীনতা।